২১ শতকের স্বাস্থ্য সচেতন বাঙালিরা অনেকেই ঘি খেতে পছন্দ করেন না। তবে আমরা আসলে জানিই না যে, কেমন করে ঘি একাধিক শারীরিক ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করে আমাদের এই মানব দেহ কে । অনেকেই আছে ঘি খায় না ভাবে পরে ওজন বেড়ে না যায় ।
সেই ভয়ে তারা যেমন ভাতের পরিমান কমিয়ে দিয়েছে, তেমনি প্রতিদিনের তালিকা থেকে বাদ পরেছে ঘি। তবে চিকিৎসা বিজ্ঞান কিন্তু অন্য কথা বলে ।
একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে ঘি খাওয়ার সঙ্গে শরীর খারাপ হওয়ার কোনও সম্পর্ক নেই। বরং পা থেকে মাথা পর্যন্ত শরীরের একাধিক অঙ্গের সচলতা বৃদ্ধিতে ঘি-এর কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে।
ব্রেন টনিক হিসেবে কাজ করে:
নিউট্রিশনিস্টদের মতে নার্ভের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধির পাশাপাশি সার্বিকবাবে ব্রেন পাওয়ারের উন্নতিতে ঘি-এর কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। আসলে এত উপস্থিত ওমাগা- ৬ এবং ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড শরীর এবং মস্তিষ্ককে চাঙ্গা রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি প্রাকাশিত বেশ কিছু গবেষমায় দেখা গেছে এই দুই ধরনের ফ্যাটি অ্যাসিড ডিমেনশিয়া এবং অ্যালঝাইমারসের মতো রোগের প্রকোপ কমাতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটায়:
খাবার হজম করতে সহায়ক নানাবিধ স্টমাক অ্যাসিডের ক্ষরণ বাড়াতে ঘি বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। ফলে বদ-হজম এবং গ্যাস-অম্বল হওয়ার আশঙ্কা হ্রাস পায়। এখানেই শেষ নয়, প্রখ্যাত সেলিব্রিটি নিউট্রিশনিস্ট রুজুতা দিওয়াকার তার লেখা একাধিক বইয়ে ঘি এর উপকারিতা সম্পর্কে আলোচনা করতে গিযে বলেছেন, খিচুড়ি বা পুরান পলির মতো খাবার ঠিক মতো হজম করাতে এই সবের সঙ্গে ঘি খাওয়া মাস্ট! কারণ ঘি যে কোনও ধরনের রিচ কাবারকে সহজে হজম করিয়ে দিতে সক্ষম।
ক্যান্সার রোগকে দূরে রাখে:
ঘিতে উপস্থিত অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরে উপস্থিত ফ্রি রেডিকালদের ক্ষতি করার ক্ষমতাকে কমিয়ে দেয়। ফলে কোষের বিন্যাসে পরিবর্তন হয়ে ক্যান্সার সেলের জন্ম নেওয়ার আশঙ্কা হ্রাস পায়। প্রসঙ্গত, আমাদের দেশে
অনেকেই ঘি সহযোগে রান্না করে থাকেন। এই অভ্যাসও কিন্তু খারাপ নয়। কারণ ঘি-এর “স্মোকিং পয়েন্ট” খুব হাই। ফলে বেশি তাপমাত্রায় রান্না করলেও কোনও ক্ষতি হয় না।
ওজন কমাতে সাহায্য করে:
একেবারেই ঠিক শুনেছেন! ঘি খেলে ওজন বাড়ে না, বরং কমে। একাধিক কেস স্টাডি করে দেখা গেছে ঘি-তে উপস্থিত এসেনশিয়াল অ্যামাইনো অ্যাসিড শরীরে জমে থাকা অতিরিক্ত চর্বিদের ঝড়িয়ে ফেলতে সাহায্য করে। ফলে স্বাভাবিকবাবেই ওজন কমতে শুরু করে।
ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে:
আয়ুর্বেদ শাস্ত্র মতে ঘি হল হল প্রকৃতিক ময়েশ্চারাইজার, যা ত্বক এবং ঠোঁটের হারিয়ে যাওয়া আর্দ্রতা ফিরিয়ে আনতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। শুধু তাই নয়, প্রতিদিন অল্প পরিমাণ খাঁটি ঘি-এর সঙ্গে যদি সামান্য় জল মিশিয়ে মুখে লাগাতে পারেন, তাহলে ত্বকের বয়স চোখে পরার মতো কমে।
হার্টের স্বাস্থের উন্নতি ঘটায়:
একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে নিয়মিত ঘি খেলে শরীরে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমতে শুরু করে। অন্যদিকে বাড়তে শুরু করে উপকারি ফ্যাটের পরিমাণ। ফলে স্বাভাবিকভাবেই হার্টের কোনও রকম ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা কমে।
আরও কিছু উপকারিতা:
নিয়মিত ঘি খেলে দৃষ্টিশক্তির উন্নতি ঘটে। সেই সঙ্গে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এতটাই শক্তিশালী হয়ে ওঠে যে কোনও ধরনের সংক্রমণই ধারে কাছে ঘেঁষতে পারে না।
কতটা পরিমাণ ঘি খাওয়া স্বাস্থ্যকর:
উপকারি খাবারও বেশি মাত্রায় খাওয়া উচিত নয়। কারণ এমনটা করলে শরীরের ভাল হওয়ার থেকে ক্ষতি হয় বেশি। যেমন, ঘি-এর কথাই ধরুন না। এই খাবারটি শরীরের এতটা উপকারে লাগে। কিন্তু কেউ যদি অনিয়ন্ত্রিত হারে ঘি খাওয়া শুরু করেন, তাহলে শরীরে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি পায়। ফলে স্বাভাবিকভাবেই হার্টের স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটে।
তাহলে এখন প্রশ্ন হল, দিনে কত পরিমাণ ঘি খাওয়া চলতে পারে? চিকিৎসকদের মতে শরীরকে সুস্থ রাখতে দৈনিক ২ চামচের বেশি ঘি খাওয়া একেবারেই চলবে না।
এনার্জির ঘাটতি দূর করে:
রাতে ঘুম ঠিক হলেও সারাদিন কেমন যেন ক্লান্ত লাগে? সেই সঙ্গে অনবরত হাই ওঠা তো আছেই? তাহলে মশাই আজ থেকেই আপনার ঘি খাওয়া শুরু করা উচিত। কারণ এই খাবারটির অন্দরে থাকা উপকারি অ্যামাইনো অ্যাসিড শরীরে প্রবেশ করার পর এনার্জির মাত্রা এতটাই বাড়িয়ে দেয় যে ক্লান্তি দূর হয়। ফলে শরীর একেবারে চাঙ্গা হয়ে ওঠে।
কারা ঘি খেতে পারবেন না:
হার্টের রোগ, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস অথবা অতিরিক্ত ওজনের সমস্যায় যারা ভুগছেন তাদের ভুলেও ঘি খাওয়া চলবে না।
সোর্স: ইন্টারনেট থেকে
এই লেখাটি পরে আমরা জানতে পারলাম কেমন করে ঘি একাধিক শারীরিক ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করে আমাদেরকে এবং এই লেখাটি পড়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। তবে আপনার পরিচিত কাউকে জানানোর প্রয়োজন হলে অবশ্যই শেয়ার করতে ভুলবেন না ।
ফেইসবুক এ আমরা : https://www.facebook.com/MrGheebd